হাজারো নেতাকর্মীদের ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত হলের কারামুক্ত বিএনপি নেতা শরিফুল ইসলাম তুহিন

hello ishwardi

রেজাউল করিম ফেরদৌস : একটি হত্যা মামলায় দীর্ঘ দুই যুগ পর কারাভোগ শেষে মুক্তি পেয়েছেন পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা শরিফুল ইসলাম তুহিন। গত সোমবার সকাল পৌনে ১১টায় পাবনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

কারামুক্তির পর জেলা কারাগার প্রাঙ্গণে তুহিনকে বরণ করে নিতে জড়ো হন কয়েক হাজার নেতাকর্মী। ফুলেল শুভেচ্ছা ও উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এক আনন্দমিছিল, যা পরে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
তাৎক্ষনিক সংবর্ধনা দেন জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। সেখানে বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও কারামুক্ত বিএনপির নেতা শরিফুল ইসলাম তুহিন।

এরপর ঈশ্বরদী, আটঘরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী মোটরসাইকেল মাইক্রোবাস, বাস, ট্রাক, সিএনজি শোডাউনের মাধ্যমে রিসিপশন জানিয়ে তাকে ঈশ্বরদীতে নিয়ে যান।

দুপুরে ঈশ্বরদীর ঐতিহাসিক পুরাতন বাসট্যান্ডে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে বিশাল গণসংবর্ধনা প্রদান করেন। গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মকলেছুর রহমান বাবলুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব।
প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. মাকসুদুর রহমান মাসুদ খন্দকার, জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আনিসুল হক বাবু, জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক নুর মোহাম্মদ বগা, পাবনা সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক মাহামুদুন নবী স্বপন, পাবনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সুইট এবং কারামুক্ত বিএনপি নেতা শরিফুল ইসলাম তুহিন, ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা জুবায়ের হাসান বাপ্পী।

পাবনা জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়নের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন বিশ্বাস, আটঘরিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলম হোসেন, বিএনপি নেতা মাহাবুবুর রহমান পলাশ, ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি রেজাউল করিম শাহীন, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজমল হোসেন ডাবলু প্রমুখ।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এত কষ্ট, এত ত্যাগ, এত নির্যাতন কীসের জন্য? আওয়ামী লীগের আমলে যারা সুবিধা নিয়েছে তারাই আজ বিএনপি সেজেছে। দলীয় লেবাসধারী কেউ চাঁদাবাজি করলে, অপকর্মে জড়িত হলে কিংবা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন তারেক রহমান।

তারা আরও বলেন, যাদের জন্য দলের ক্ষতি হবে, যারা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশ অমান্য করবে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের রুখে দিতে হবে। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষকে বিজয়ী করে তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে
মুক্তি পাওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় শরিফুল ইসলাম তুহিন বলেন, ‘রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলক একটি হত্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছিল। দেরীতে হলেও মুক্তি পাবার পর তিনি উচ্ছসিত। তিনি ঈশ্বরদীর নেতা-কর্মীসহ জেলা বিএনপি নেতাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামীতে দলের সঙ্গে থেকে মানুষের জন্য কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।’

এ সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘তুহিনের মুক্তির মাধ্যমে ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপি আরও শক্তিশালী হলো। দল আরও সুসংগঠিতভাবে সামনে এগিয়ে যাবে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও কিছু রাজনৈতিক দল তারেক রহমানকে কটাক্ষ করে স্লোগান দিয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে কাটাক্ষ করার অধিকার কারো নেই। কেউ যদি বিএনপিকে নিয়ে খেলতে চায় তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে তাদের বিদায় নিতে হবে।’

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে একটি হত্যা মামলায় ঈশ্বরদী যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম তুহিনসহ বেশ কয়েকজন যুবদল নেতাকে ফাঁসিয়ে দেয় একটি মহল। সেই মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি ২২ বছর কারাভোগ করেন।

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর চলতি বছরের গত ১০ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ কারা-২ শাখা থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে সরকার কর্তৃক সাজা মওকুফ করায় ২৯ জন কয়েদির মুক্তির কথা বলা হয়। তাদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম তুহিনের নামও রয়েছে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও জনপ্রিয় যুবদল নেতা শরিফুল ইসলাম তুহিনের মুক্তির খবরে এলাকাবাসী ও নেতা-কর্মীদের মধ্যে খুশির আমেজ বইছে। তার মুক্তির খবরে মোড়ে মোড়ে রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় পোষ্টার, ফেসটুন টাঙিয়ে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন নেতা-কর্মীরা। এছাড়াও আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন নেতা-কর্মীরা।

SHARES

ফেসবুকে অনুসরণ করুন

আরো পোস্টঃ